পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে পড়ালেখার পরিবর্তে শিশুকাল থেকেই শিশুদের মাছ শিকারে ঠেলে দেয় নিরক্ষর অভিভাবক জেলেরা। যে বয়সে হাতে থাকবে বই, কাঁধে থাকবে স্কুলব্যাগ; সে বয়সে ওদের নদীর উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে করতে হয় মাছ শিকার, বহন করে মাছের ঝুড়ি। শিক্ষাবঞ্চিত এমন শিশুদের শিক্ষার আলো দেখিয়েছে মেঘনাপাড় ফাউন্ডেশন। লক্ষ্মীপুর জেলার মজু চৌধুরীহাটে মেঘনা নদীর বুকে বসবাসরত ধীবর তথা জেলে জনগোষ্ঠীর শিশুদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন।
২০০৮ সালে স্বল্প পরিসরে শিশুদের পাঠদানের ব্যবস্থা শুরু হলেও বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২২০ জন। ৬ জন শিক্ষক নিয়ে শিশু শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষাদানের ব্যবস্থা রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটিতে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছে মেঘনাপাড় ফাউন্ডেশন। স্কুলের জন্য জমি ক্রয় করে স্থায়ী ক্যাস্পাসের কাজ চলমান রয়েছে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো: জহিরুল ইসলাম জানান, সুবিধাবঞ্চিত জেলে জনগোষ্ঠীর শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিদ্যালয়ের শ্রেনী কক্ষে প্রয়োজনমত বেঞ্জ, খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ততা না থাকলেও সাধ্যের মধ্যেই শিশুদের পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছি। মেঘনাপাড় ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় আমরা সুবিধাবঞ্চিত জেলে সম্প্রদায়ের শিশুদের শিক্ষার আলো দেখাতে পারছি।
মেঘনাপাড় ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আক্তারুজ্জামান ভূঞা জানান, মেঘনাপাড়ের জেলে জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত জীবন গঠনের লক্ষ্যে আমরা ২০০৮ সাল থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। আমরা প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করবো, যাতে এসব ছেলেমেয়েরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। জেলে পরিবারের স্বচ্ছল জীবন গঠনে আমরা সবসময় পাশি আছি।