লক্ষ্মীপুর জেলার মজু চৌধুরীহাটে ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন। মূলত জেলে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্যই স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। স্কুলটিতে শিশু শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম চলে। বর্তমানে ২২০ জনেরও অধিক শিক্ষার্থী স্কুলটিতে পড়াশোনা করছে। সমাজের বিভিন্ন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি, ক্লাব, সংগঠনের সহায়তায় স্কুলটি চলছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ইনার হুইল ক্লাব অব ঢাকা ডিস্ট্রিক্ট’ সব শিক্ষার্থীর জন্য স্কুল ড্রেস উপহার দিয়েছে। এ উপলক্ষে স্কুল প্রাঙ্গনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্কুল ড্রেস উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনার হুইল ক্লাব অব ঢাকা কসমোপলিটন, ডিস্ট্রিক্ট-৩২৮ এর প্রেসিডেন্ট জনাব তারানা নাশিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উক্ত ক্লাবের জেনারেল মেম্বার জনাব ফারহা তানভীন আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতনের সভাপতি ডা. আশফাকুর রহমান মামুন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জনাব মোঃ আখতারুজ্জামান ভূঁইয়া। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ইউএসএইড এর পরিচালক (রিসার্চ মনিটরিং ইভ্যালুয়েশন) জনাব মোঃ মিজানুর রহমান, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক এবং লাভ ফুটবল প্লে ফুটবল এর রূপকার জনাব আবুল কাশেম সোহাগ। ২০ নং চর রমনীমোহন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল।
২২০ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে প্রত্যেকের হাতে স্কুল ড্রেস তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থী সবার জন্য ইনার হুইল ক্লাব অফ ঢাকা কসমোপলিটন, ডিস্ট্রিক্ট-৩২৮ এর পক্ষ থেকে টিফিন দেওয়া হয়। স্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধি সোহরাব মাঝি, স্কুলের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম এবং অন্যান্য শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে স্কুল ড্রেস উপহার এবং টিফিন বিতরণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।
ইনার হুইল ক্লাব অফ ঢাকা কসমোপলিটন ডিস্ট্রিক্ট-৩২৮ এর প্রেসিডেন্ট তারানা নাশিদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, স্কুল ড্রেস উপহার প্রদানের মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে কনফিডেন্স বাড়বে। পড়ালেখায় আরো অধিক মনোযোগী হবে। ভবিষ্যতে এই স্কুলের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফারহা তানভীন আলম বলেন, ধীবর বিদ্যানিকেতনের শিক্ষার্থীরা কেউ ছোট থাকবে না। সবাই শিক্ষিত হবে। তিনিও এই শিশুদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ইউএসএইড এর পরিচালক মিজানুর রহমান স্কুলের উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানান। এরকম প্রত্যন্ত অঞ্চলে, নৌকায় বসবাসরত ধীবর শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল স্থাপনের উদ্যোগকে মহৎ কর্ম বলে উল্লেখ করেন তিনি।স্কুলের জন্য প্রয়োজনে বিদেশি বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে সহায়তা চাওয়ার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
অনুষ্ঠান শেষে স্কুলের ব্যবস্থাপনায় ঢাকা থেকে আগত অতিথিদের নিয়ে মেঘনা নদীতে কিছুদূর ভ্রমণ করা হয়। ফেরার পথে ধীবর কারিগরি স্কুলের ক্রয়কৃত জমি পরিদর্শন করেন অতিথিবৃন্দ।